“জ্ঞান অর্জন করতে হলে সুদূর চীনে যাও” এই কথাটি বর্তমানে বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের কাছে একটি নতুন বাস্তবতা। কোভিড-পরবর্তী সময়ে চীন উচ্চশিক্ষা এবং চাকরির সুযোগের ক্ষেত্রে একটি জনপ্রিয় গন্তব্য হয়ে উঠেছে।
বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা বিশেষ করে সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং, আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স, আন্তর্জাতিক বাণিজ্য, মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং এবং মেডিসিনের মতো বিষয়ের উপর চীনে পড়াশোনা করছে। স্থানীয় পরামর্শক সংস্থাগুলোর তথ্য অনুযায়ী, প্রায় ৮০% বাংলাদেশি শিক্ষার্থী স্নাতক ডিগ্রি অর্জনের জন্য চীনে যাচ্ছে, কারণ চীনের শিক্ষা খরচ পশ্চিমা দেশগুলোর তুলনায় অনেক কম।
বেইজিংয়ে হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ডাঃ মিসবাহুল ফেরদৌস জানান, মহামারী চলাকালীন বন্ধ থাকার পর চীনা বিশ্ববিদ্যালয়গুলো আবার আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য তাদের দরজা খুলে দিয়েছে, যার ফলে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের প্রবাহ বাড়ছে।
তিনি উল্লেখ করেন, চীনা ভাষার প্রতি শিক্ষার্থীদের কিছু উদ্বেগ থাকলেও, যারা চার বছর চীনে পড়াশোনা করে, তারা সহজেই ভাষা শিখতে পারে এবং তাদের আত্মবিশ্বাসের স্তর বৃদ্ধি পায়।
চীনা বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য অনেক বৃত্তির ব্যবস্থা করছে। ২০২২ সালে ১৭৬ জন বাংলাদেশি শিক্ষার্থী চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য পাড়ি জমায়।
যদিও কিছু সমস্যা যেমন ভাষা প্রতিবন্ধকতা এবং চাকরির সীমিত সুযোগ রয়েছে, তবুও চীন বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য একটি আকর্ষণীয় বিকল্প।
ঢাকায় FICC নামক একটি বেসরকারি শিক্ষা-পরামর্শ সংস্থা জানায়, তারা বিদেশে শিক্ষার জন্য শিক্ষার্থীদের চীনে পাঠাতে কাজ করছে, কারণ চীনের শিক্ষা ব্যয় পশ্চিমা দেশের তুলনায় কম।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব জহুরুল ইসলাম বলেন, তারা কারিগরি শিক্ষার ক্ষেত্রে চীনের সাথে সহযোগিতা বাড়ানোর চেষ্টা করছেন এবং প্রতি বছর বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য বৃত্তি প্রদান করা হয়।
২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষে ৫৫ জন বাংলাদেশি শিক্ষার্থী চীনা সরকারি বৃত্তি (CGS) জিতেছে, যা আগের বছরের তুলনায় উল্লেখযোগ্য। চীনে পড়াশোনার সুযোগের জন্য প্রতিযোগিতা ক্রমেই বাড়ছে, যা গত তিন বছরের মধ্যে সবচেয়ে তীব্র প্রতিযোগিতা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
সিজিএস বিজয়ীরা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হয়েছেন, যেমন পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়, সিংহুয়া বিশ্ববিদ্যালয় এবং ঝেজিয়াং বিশ্ববিদ্যালয়।